ছবিঃসংগৃহীত
আগা সালমানকে ফাইন লেগ দিয়ে জাকির হাসান চার মারতেই ইতিহাস গড়ে ফেলল বাংলাদেশ। দুই অপরাজিত ব্যাটার জাকির-সাদমান ইসলামের সঙ্গে আনন্দের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ল ড্রেসিংরুমের বারান্দায়, যেখানে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ উইকেটের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের পর পুরো বাংলাদেশ দল ভাসছে উচ্ছ্বাসে।
২০০১ থেকে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তানের মাঠে কখনোই জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। রাওয়ালপিন্ডিতে ভাঙল অচলায়তন। পাকিস্তানে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পেল জয়ের দেখা। বাংলাদেশ টেস্টে প্রথমবারের মতো ১০ উইকেটে জয়ের দেখাও পেল আজ।
চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশ চালকের আসনে থাকলেও শেষ দিনে জিততে হলে দুর্দান্ত বোলিং করতে হতো বাংলাদেশকে। সাকিব আল হাসান–মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে সে কাজটা হয়ে যায়। পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয়ে যায় ১৪৬ রানে। ৩০ রানের মামুলি লক্ষ্যে নেমে বাংলাদেশের দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম ঠান্ডা মাথায় খেলা শেষ করে আসেন। ওভারে ১৮ রান তুলে ফেলা বাংলাদেশের জিততে আর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলে কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ জয় নিশ্চিত করে ফেলে। আর তাতেই গড়া হয় ইতিহাস।
১ উইকেটে ২৩ রানে আজ পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করে পাকিস্তান। খেলা শুরুর দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় স্বাগতিকেরা। উইকেট হারানোর পতনের ধারা পাকিস্তান আর ঠেকাতে পারেনি। মোহাম্মদ রিজওয়ানের ৫১ রানের প্রতিরোধও বাংলাদেশের বোলারদের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। দুই অভিজ্ঞ স্পিনার সাকিব–মিরাজের ভেলকিতে পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস থেমে যায় ১৪৬ রানেই। মিরাজ নেন ৪ উইকেট, সাকিবের উইকেট ৩ টি।
শেষ দিনে বাংলাদেশের বোলাররা ছড়ি ঘোরালেও এই ম্যাচের নায়ক আসলে মুশফিকুর রহিম, যাঁর ১৯১ রানের দ্যুতিময় ইনিংস পাকিস্তানে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে ঐতিহাসিক এক জয়। আর তাতেই ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ—বিদেশের মাঠে টেস্টে এমন স্কোরলাইন যে হরহামেশা করতে পারে না। বিদেশের মাঠে এ দিয়ে মাত্র ৯ম টেস্ট জিতল বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৪৪৮/৬ (ডিক্লে) (
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫৬৫
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ১৪৬ (লিড ২৯)
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩০) ৬.৩ ওভারে ৩০/০ (জাকির ১৫ *, সাদমান ৯ *)
ফল: বাংলাদেশ ১০ উইকেটে জয়ী
এনপি/আর