
ছবি সংগৃহীত
শনিবার সকাল ৮টার দিকে ইন্তেকাল করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিবারের সদস্যরা জানান, বার্ধক্যজনিত জটিলতার কারণে অধ্যাপক মীর মোবাশ্বের আলী মারা গেছেন।
বাদ আসর জানাজা শেষে মীর মোবাশ্বের আলীকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়। মীর মোবাশ্বের আলীর জন্ম ১৯৪১ সালে।
১৯৫৮ সালে তিনি আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হন। লেখাপড়ার পাশাপাশি নানা ধরনের কো–কারিকুলার কাজে উৎসাহী ছিলেন তিনি। প্রকৌশলীদের সাহিত্য ও সুকুমার শিল্পে বিকাশ এবং মানসিক মননে উৎসাহী ছিলেন তিনি। ১৯৬২ সালে ইউকসুর সভাপতি হন। ১৯৬২ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর স্থাপত্য বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
২০০৬ সাল পর্যন্ত টানা প্রায় ৪৫ বছর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তিনি অনেকদিন বিভাগীয় প্রধান ও অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮ সালে টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি সব সময় মনে করতেন স্থাপত্য শিক্ষা তথা যেকোনো সৃজনশীল বৃত্তি অনুশীলনের পরিবেশ, সাধারণ বা প্রকৌশল শিক্ষার পরিবেশের চেয়ে একটু ভিন্ন। এই সত্য প্রতিষ্ঠিত করতে তাকে অনেক চড়াই–উৎরাই পার হতে হয়েছে। অনেক শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা ও বিধি–নিষেধ পেরিয়ে আজ স্থাপত্য বিভাগের যে অবস্থান, একজন প্রধান প্রতিষ্ঠাকারী হিসেবে তাতে তার অবদান অনেক।
মীর মোবাশ্বের আলী শিক্ষকতার মধ্যে থেকেও স্থাপত্য পেশার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থেকেছেন। বিভিন্ন পর্যায়ে ডিজাইনের কাজ করেছেন। প্রথম পর্যায়ে গাজীপুরের টঙ্গীতে টেলিফোন ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (টিআইসি), ফৌজি জুট মিল, ঘোড়াশাল ফ্লাগ স্টেশন ও অফিস ভবন, চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বিসিআইসি হাউজিং, ঢাকা এয়ারপোর্টে সিভিল এভিয়েশন অফিস, ফ্রেইট টার্মিনাল ছাড়াও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের ডরমিটরি ও অনেক প্রাইভেট বাড়ি ডিজাইন করেন।
১৯৯৫ সালে জাপান থেকে প্রকাশিত ‘৫৮১ আর্কিটেক্টস ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ শিরোনামের স্থাপত্য পুস্তিকায় বাংলাদেশ থেকে তার জীবনী এবং ডিজাইন অন্তর্ভুক্ত ও নির্বাচন করা হয়।