বৃহস্পতিবার ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, পৌষ ১২ ১৪৩১

Aloava News24 | আলোআভা নিউজ ২৪

ব্যাংকে ‘১৩৪ কোটি টাকা’ নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন মুন্নী সাহা

অর্থনীতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:৫৫, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ব্যাংকে ‘১৩৪ কোটি টাকা’ নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন মুন্নী সাহা

ছবি সংগৃহীত

সাংবাদিক মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাবে বেতনের বাইরে জমা হয়েছে ১৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে তিনি বিভিন্ন সময় ১২০ কোটি টাকা তুলেছেন। এখন স্থগিত করা তার ব্যাংক হিসাবে স্থিতি আছে মাত্র ১৪ কোটি টাকা। মুন্নী সাহা তার স্বামী কবির হোসেন তাপস এবং তাদের মালিকানাধীন এমএস প্রমোশনের ব্যাংক হিসাবে এসব অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)

অবশেষে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন সাংবাদিক মুন্নী সাহা। জানালেন এই টাকা কার, তার সঙ্গেই বা এই টাকার সম্পর্ক কি। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই বিষয়ে বিশাল একটি স্ট্যাটাস দেন এই সাংবাদিক।

মুন্নী সাহা তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আজ দেশের অনেকগুলো নিউজ পোর্টাল এবং দৈনিকে আমার অ্যাকাউন্টে কত টাকা তা নিয়ে কিছু মিসলিডিং হেডলাইন দেখে বিস্মিত হয়েছি। অনেকেই আমার অ্যাকাউন্টে ১৩৪ কোটি টাকাএমন ফটোকার্ড বানিয়ে ক্লিক নিচ্ছেন।

মুন্নী সাহার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট একাউন্টবলে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে যাতে জনমনে ধারণা হচ্ছে এই একাউন্টগুলো আমার।

কোন অ্যাকাউন্টের নমিনি হলে সেটিস্বার্থ সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টবলে এক ধরনের ধোঁয়াশা তৈরি করা যায়, কিন্তু সেই অ্যাকাউন্টগুলো যে আমার নয়, সেটি কৌশলে এড়িয়েও যাওয়া যায়।

প্রথমত, কবির হোসেন তাপস দেশের একজন পুরোনো ব্যবসায়ী। বিগত সুদীর্ঘ ২২ বছর ধরে তিনি বিজ্ঞাপন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টসহ বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত। ওয়ান ব্যাংকের যে অ্যাকাউন্টটির কথা বলা হয়েছে, আমি সেই অ্যাকাউন্টের একজন নমিনি মাত্র; অ্যাকাউন্টের লেনদেনের সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। কবির হোসেন তাপসের কোন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে আমি অংশীদার নই, কোন অ্যাকাউন্টের গ্যারান্টারও নই।

অ্যাকাউন্ট ওপেন করার সময় পরিবারের কাউকে নমিনি হিসেবে দিতে হয় বলে এই অ্যাকাউন্টে আমার নাম দেয়া আছে মাত্র।

আলোচিত অ্যাকাউন্টটি ২০১৭তে খোলা হয়েছে এবং বিগত বছরে এই অ্যাকাউন্টে ১৩৪ কোটি টাকালেনদেনহয়েছে।লেনদেনএর মানে আমার বন্ধুরা নিশ্চয়ই বুঝেন, এর মানে হচ্ছে প্রতিটি কার্যাদেশের বিপরীতে সব টাকা এখানে জমা হয় এবং সেই টাকা থেকে বিভিন্ন সাপ্লায়ার, ভেন্ডর, সরকারি কর ভ্যাট, কর্মচারীদের বেতন অন্যান্য অপারেটিং খরচ পরিশোধ করা হয়। এই হিসাবে বছরে এই অ্যাকাউন্টে মোট ১৩৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গড়ে মাসে দেড় কোটি টাকার মতো। একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে মাসে দেড় কোটি টাকার ব্যবসা করা অস্বাভাবিক নয়, এবং সেই টাকার বড় অংশই টাকা বিভিন্ন সাপ্লায়ার, ভেন্ডর, অফিস খরচ, কর্মচারীদের বেতনভাতা, ভ্যাট কর হিসেবে খরচ হয়, যাকে এখানেলেনদেনহিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু খবরে এমনভাবে বিষয়টি প্রচার করা হচ্ছে যাতে মনে হয় ১৩৪ কোটি টাকা একই সাথে এখানে জমা ছিল, যা সত্যের অপলাপ।

কোনো কোনো রিপোর্টে কৌশলে লিখেছে যে, আগস্টের আগে ১২০ কোটি টাকা তোলা হয়েছে। সেটাও যে লেনদেন, মানে ২২ বছরের বেতন বিল, ভাড়া, খরচ সবকিছু বাবদ; ২২ বছরের প্রতি মাসে মাসে হিসেবে তোলা সেটা এড়িয়ে, শুধুমাত্র ভুল বার্তা দেয়ার জন্য করা হয়েছে; সেটা আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করেছি।

উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, আমি যতদূর জানি, কবির হোসেন তাপসের প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে ব্যাংক ঋণগুলো নিয়মিত আছে। আলোচ্য ব্যাংকটি একটি প্রাইভেট ব্যাংক যারা নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থ অক্ষুন্ন রেখে বিভিন্ন সময়ে এই ব্যাংক ঋণগুলোর মেয়াদ কিস্তি সমন্বয় করে থাকে, যেটি খুবই স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। কবির হোসেন তাপসের কোন খেলাপি ঋণ নেই এবং বর্তমান ঋণগুলোও খেলাপি হওয়ার আশু কোন সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয় না।

বাংলাদেশ ব্যাংক ইন্টিলেজেন্স ইউনিট যে কারোরই হিসাব চাইতে পারেন। সেই তালিকায় সাংবাদিক হিসেবে অনেকের সাথে আমার নাম ছিল এবং কর্তৃপক্ষ দক্ষতা নিষ্ঠার সাথে অনুসন্ধান করেছে বলে আমার বিশ্বাস।

একজন সংবাদকর্মী হিসেবে মনে করি, বাংলাদেশের যে কোনো ব্যবসায়ীর দীর্ঘ ২২ বছরের ব্যবসায়, মোট লেনদেন ১৩৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয় ১৪ কোটি টাকা, কোনো গুরুত্ব বহন করে না। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, শুধুমাত্র আমার নামটি নমিনিতে ব্যবহার করায় একজন ব্যবসায়ী সামাজিক হ্যারাসমেন্টের শিকার হয়েছেন, এখনও তার লেনদেন ব্যাহত হচ্ছে।

আমি ঘটনাটিকে বা আমাকে নিয়ে যা যা ঘটছে, তা blessings in disguised হিসেবে গ্রহণ করছি। যদিও আমাকে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে ট্যাগ দিয়ে মামলা দেয়া হয়েছে, গত ১৪/১৫ বছর ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাকে নিয়ে যে অপপ্রচার চালানো হয়েছে, তার পুরোটাই যে ভুল, তা অন্তত ধরনের ইনভেস্টিগেশনে প্রমাণিত হলো।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়