ছবি সংগৃহীত
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আলাদা বাণী দিয়েছেন তারা।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সঙ্গে মিশে আছে চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সারাদেশে যথাযথ উৎসাহ–উদ্দীপনা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদির মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজা উদযাপন আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি অনন্য উদাহরণ।
তিনি আরও বলেন, এ দেশের হিন্দু সম্প্রদায় আবহমানকাল ধরে বিপুল উৎসাহ–উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজা উদযাপন করে আসছে। দুর্গাপূজা ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি সামাজিক উৎসবও। দুর্গোৎসব উপলক্ষে সমাজের সকল স্তরের মানুষ একত্রিত হন, মিলিত হন আনন্দ–উৎসবে। সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ এ উৎসবকে সার্বজনীন রূপ দিয়েছে। ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি দুর্গাপূজা দেশের জনগণের মাঝে পারস্পরিক সহমর্মিতা ও ঐক্য সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব সত্য–সুন্দরের আলোকে ভাস্বর হয়ে উঠুক; ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধন আরও সুসংহত হোক– এ কামনা করি। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার পাশাপাশি আমাদেরকে মানবতার কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে। সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় দেশের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায় জান–মাল, অবকাঠামো, কৃষি ও প্রাণিসম্পদসহ সার্বিক জীবনযাত্রা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বানভাসি মানুষের সহায়তায় সরকারের পাশাপাশি ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ মানব কল্যাণের জয়গানকে তুলে ধরেছে।
পৃথক বাণীতে অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে আমি দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকল নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবই নয়, এটি এখন সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এই দেশ আমাদের সকলের। ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে এদেশ সকল মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র–শ্রমিক–জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতি–ধর্ম–বর্ণ–গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলের ভাগ্য উন্নয়ন এবং সমান অধিকার সুনিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ক্ষুধা–দারিদ্রমুক্ত ও সুখী–সমৃদ্ধ স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানাই।