ছবি সংগৃহীত
পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে ১৫ বছরেরও বেশি সময় পর মুখ খুললেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ। বিদ্রোহের বিষয়ে বিস্তারিত কথার ফাঁকে ঘটনার সময় এটিএন নিউজের তৎকালীন সাংবাদিক মুন্নী সাহার সাংবাদিকতা নিয়েও কথা বলেছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) মইন ইউ আহমেদ নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এসব কথা বলেন।
বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘পিলখানার ভেতরে কী হচ্ছে, তারা (জওয়ানরা) কি অফিসারদের জিম্মি করছে না হত্যা করছে? শুধু আমরা গুলির আওয়াজ শুনছি এবং এই গুলির আওয়াজ ছড়িয়ে পড়ছে ওই এলাকার চারপাশে। গোয়েন্দাদের থেকে আমরা কোনো তথ্যই পাচ্ছিলাম না। শুধু ইলেকট্রনিক মিডিয়ার লোকজন (সাংবাদিক) ওখানে লাইভ প্রোগ্রাম কাভার করছিল।’
তিনি বলেন, ‘যার মধ্যে যারা ছিল আমার মনে পড়ে মুন্নী সাহা কাজ করছিল লাইভ এবং বিদ্রোহীরা অফিসারদের সম্পর্কে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য, ভুল তথ্য তুলে ধরছিল জনগণের সামনে। এর মাধ্যমে একটি ভুল ধারণা সৃষ্টি হচ্ছিল অফিসার সম্বন্ধে। এ ছাড়াও বিডিআরের অন্যান্য ক্যাম্পেও এই বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করছে।’
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘৯টা ৪৭ মিনিটে বিডিআরের মহাপরিচালককে ফোনে পাওয়া গেলো। আমি ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়েছে? তিনি এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ আমাকে বলেন। ‘
বিদ্রোহের পর সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ সম্পর্কে সাবেক এ সেনাপ্রধান বলেন, ‘ক্যাপ্টেন শফিক ৩৫০ জন র্যাব সদস্য নিয়ে পিলখানা এলাকায় পৌঁছে গেলেন। তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে অনুমতি চান, পিলখানায় প্রবেশ করার জন্য। যেটা তিনি পাননি।’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘তাকে যদি পারমিশন দেওয়া হতো ভেতরে প্রবেশ করার জন্য, বিদ্রোহীরা তখনো সংগঠিত হয়নি এবং ক্ষয়ক্ষতিও করতে পারেনি। ক্যাপ্টেন শফিক নিজেই তাদেরকে মোকাবিলা করতে পারতেন এবং কিছুক্ষণ পরেই আমরা এসে তার সঙ্গে মিলিত হয়ে বিদ্রোহীদের দমন করতে পারতাম। ’
তিনি বলেন, ‘ব্রিগেড কমান্ডারের নেতৃত্বে ১০ জন অফিসারের নেতৃত্বে ৬৫৫ জন অফিসার সেদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করেন। যার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘‘অপারেশন রেস্টোর অর্ডার’’। আমি সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে (শেখ হাসিনা) বলি, ‘‘অপারেশন রেস্টোর অর্ডার’’ পরিচালনার শুরুতেই আমাদের একজন সৈনিককে নিহত হতে হয়েছে এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এইমাত্র খবর পেলাম বিদ্রোহীরা অনেক অফিসারকে হত্যা করেছে।’
মঈন ইউ আহমেদ বলেন, ‘আমি আরও বলি, বিদ্রোহীদের কোনো শর্ত মানা যাবে না। আর আপনি তাদেরকে বলবেন, অফিসার হত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আশা করব একটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য বের করে যারা এখনো দোষী চিহ্নিত হয়নি, কিন্তু এর সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে সঠিক বিচার করা হোক।’