শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪, কার্তিক ৩ ১৪৩১

Aloava News24 | আলোআভা নিউজ ২৪

কোটার যুক্তিসংগত সংস্কারের পক্ষে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম

জাতীয় ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:৫৮, ১১ জুলাই ২০২৪

কোটার যুক্তিসংগত সংস্কারের পক্ষে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম

ছবি: ইন্টারনেট

দেশে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার যুক্তিসংগত বাস্তবসম্মত সংস্কার চায়সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ৭১

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সংগঠনটির কার্যনির্বাহী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নূরুল আলম এবং মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব যৌথ বিবৃতিতে কথা জানান।

বিবৃতিতে তারা বলেন, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ৭১ মনে করে, অনেক বছরের ব্যবধানে, বিশেষত মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পার হওয়ার পর আগেকার কোটা ব্যবস্থার যুক্তিসংগত বাস্তবসম্মত সংস্কার হতে পারে, যাতে নতুন প্রজন্মের সত্যিকার মেধাবীরা বঞ্চিত না হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের প্রায় সব প্রান্তেই পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কোটা ব্যবস্থার প্রচলন আছে। আরও আছে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামী বা বীর মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের উত্তর-প্রজন্মের জন্য সম্মান সুযোগের ব্যবস্থা। সেই দৃষ্টিভঙ্গিতেই যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের সূচনাকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছিলেন।

কিন্তু ১৯৭৫ সালের রক্তাক্ত পটপরিবর্তনের পর দীর্ঘ ২১ বছর মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাবিদ্বেষী সামরিক শাসক তাদের  রাজনৈতিক অনুসারীরা ক্ষমতায় থাকায় স্বাধীনতা সংগ্রামী বা বীর মুক্তিযোদ্ধারা কোটার সুবিধা লাভ করেননি; বরং বহু ক্ষেত্রে তারা হয়রানি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

শুধু তাই নয়, সময় সুপরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা সব মুক্তিযোদ্ধার জন্যই উত্তীর্ণ হয়ে যায়।

এমনকি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের সন্তানরাও সরকারি চাকরির বয়সসীমা অতিক্রম করে। সে কারণে জাতীয় বীরদের মর্যাদা সম্মান প্রদর্শনের অংশ হিসেবে ২০০৯ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান-প্রজন্মের জন্য কোটা ব্যবস্থার সম্প্রসারণ করা হয়।

২০১৮ সালের ছাত্র আন্দোলনের ফলে সরকার সব ধরনের কোটা রহিত করে পরিপত্র জারি করে, যা সুবিবেচনাপ্রসূত ছিল বলে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মনে করে না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের পক্ষ থেকে পরিপত্রের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়। হাইকোর্ট ২০১৮ সালের পরিপত্রটি বাতিল ঘোষণা করে আদেশ জারি করেন। সরকারের পক্ষ থেকে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলও করা হয়। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাদেশ দিয়ে কয়েকটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। তারপরও আন্দোলন দৃশ্যমান হচ্ছে।

বিবৃতিতে তারা বলেন, নতুন প্রজন্মের নাগরিকদের আমরা জাতির শ্রেষ্ঠ সময় মুক্তিযুদ্ধকে জানার আহ্বান জানাই। তাদের আরও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, মুক্তিবাহিনীর যেসব সদস্য ১৯৭১ সালে জীবনবাজি রেখে পাকিস্তানি হানাদার সেনাবাহিনী তাদের দেশীয় অনুচরদের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র গড়েছিলেন, তাদের সিংহভাগ ছিলেন গ্রামগঞ্জের সুবিধাবঞ্চিত দেশপ্রেমিক মানুষ। যারা কয়েক যুগ ধরে উপেক্ষিত অবহেলিত থেকেছেন।

কিছু উন্নয়নের পরও জনসংখ্যার অর্ধেক নারীসমাজ আজও পিছিয়ে আছে। পিছিয়ে আছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা। অতএব রাষ্ট্রের চাকরিক্ষেত্রে তাদের সবার জন্য বিবেচনাপ্রসূত হারে কোটার ব্যবস্থা অবশ্যই যুক্তিসংগত। তবে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ৭১ মনে করে, অনেক বছরের ব্যবধানে, বিশেষত মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পার হওয়ার পর আগেকার কোটা ব্যবস্থার যুক্তিসংগত বাস্তবসম্মত সংস্কার হতে পারে, যাতে নতুন প্রজন্মের সত্যিকার মেধাবীরা বঞ্চিত না হয়।

সেইসঙ্গে ফোরাম আরও মনে করে, আন্দোলনের বাতাবরণে দেশের স্বাধীনতাবিরোধী মহলের অনুপ্রবেশ ঘটলে এবং  বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান মুক্তিযুদ্ধ জাতীয় বীরদের আত্মত্যাগকে কটাক্ষ অবমূল্যায়ন করা হলে, তা হবে চরম দুর্ভাগ্যজনক উদ্বেগজনক।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়