শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ৬ ১৪৩১

Aloava News24 | আলোআভা নিউজ ২৪

বাদ পড়াদের বাংলাদেশে পাঠাতে চান অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

আপডেট: ০৯:০৫, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বাদ পড়াদের বাংলাদেশে পাঠাতে চান অর্থমন্ত্রী

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) থেকে বাদ পড়াদের বাংলাদেশে পাঠাতে চান রাজ্যটির অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এই বিষেয় শিগগিরই তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। হিমন্ত বিশ্ব শর্মা শনিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘১৪-১৫ লাখ বিদেশিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশকে তাদের এই ১৪-১৫ লাখ লোককে ফিরিয়ে নিতে বলা হবে।’ উল্লেখ, শনিবার প্রকাশিত এনআরসি থেকে ১৯ লাখ রাজ্যবাসী বাদ পড়েছেন। কিন্তু তাতেও হিমন্ত শর্মা সন্তুষ্ট নন। ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে তিনি এ নিয়ে অসন্তুষ প্রকাশ করেছেন। তার দাবি, সঠিকভাবে এনআরসি তৈরি হলে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে আরও বেশি মানুষের বাদ পড়ার কথা। কিন্তু সেটি না হওয়ায় অসংখ্য বিদেশি (বাংলাদেশি) এনআরসিতে ঠাঁই পেয়েছে বলে দাবি করেন হিমন্ত। এদিকে রোববারও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন ও স্বরাষ্ট্র আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমে বলেছেন, আসামের এনআরসির বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীন বিষয়। এনআরসি থেকে বাদ পড়াদের বাংলাদেশে পাঠানোর বিষয়টি তারা নাকচ করে দেন। সাক্ষাতকারে আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা  বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলব এবং তাদের লোকদের ফিরিয়ে নিতে বলব। কিন্তু যত দিন ফিরিয়ে না নেওয়া হচ্ছে, তত দিন আমরা তাদের ভোটাধিকার দেব না, তবে বিশেষ কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার ভারতের বন্ধু। তারা আমাদের সহযোগিতা করছে। এনআরসি তালিকায় নাম না থাকা লোকেদের ফেরত পাঠাতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে বলেও জানান ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এই নেতা। তিনি বলেন, ‘এনআরসি তালিকায় নাম নেই মানে এটা নয় যে তাদের বিদেশি আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। তাদের ব্যাপারে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। কিন্তু তত দিন পর্যন্ত ভারতের কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমে তাদের অংশ নিতে দেওয়া হবে না।’ গত শনিবার চূড়ান্ত এনআরসি প্রকাশ করে আসাম। ওই তালিকায় চূড়ান্তভাবে ঠাঁই হয়েছে ৩ কোটি ১১ লাখ লোকের। আর তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখ ৬ হাজার মানুষ। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের আগের দিন শুক্রবার আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল রাজ্যবাসীকে শান্ত থাকার আবেদন জানিয়ে বলেন, কেউ যেন আতঙ্কগ্রস্ত না হন। যাঁদের নাম তালিকায় থাকবে না, তাঁদের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে (এফটি) আবেদন জানাতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, নাগরিকত্ব প্রমাণে সরকার তাঁদের সব রকমের সহায়তা দেবে। আসাম রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, এনআরসিতে নাম না ওঠা ব্যক্তিরা এফটিতে আবেদনের জন্য ১২০ দিন সময় পাবেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ট্রাইব্যুনালে ব্যর্থ হওয়ার অর্থও বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হওয়া নয়। ব্যর্থ নাগরিকেরা প্রথমে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে পারবেন, তারপর সুপ্রিম কোর্টের। আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হলে কাউকেই ডিটেনশন ক্যাম্পে (ডি-ক্যাম্প) পাঠানো হবে না। ১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তিতে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি তৈরির কথা বলা ছিল। ভিত্তি বর্ষ ধরা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ। কিন্তু দীর্ঘ টালবাহানায় নাগরিক পঞ্জি তৈরি করা হয়ে ওঠেনি। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে এনআরসি তৈরির কাজ হাতে নেওয়া হয়।
শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়