ছবি: সিলেটি’র ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া
আজ ২১ মে বিশ্ব চা দিবস। আজকের দিনটি চা প্রেমীদের দিন। তারা চাইলে আজকের দিনটি উদযাপনে একত্রিত হতে পারেন, কিংবা মেতে উঠতে পারেন চা আড্ডায়।
চা প্রেমী মানুষদের কাছে এটি একটি আবেগের নাম। কারণ চা ছাড়া তাদের চলেই না। মন ভালো থাকলে তারা চা খায়, মন খারাপ থাকলে চা খায়, ঠাণ্ডা লাগলেও চা খায় আবার গরম লাগলেও চা খায়।
চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে সকাল শুরু করতে না পারলে দিনটা মাটি হয়ে যায় অনেকেরই। আবার নাস্তার পর কিংবা কাজের ফাঁকে নিজেকে চাঙ্গা রাখতে এক কাপ চায়ের জুড়ি মেলা ভার।
জেনে অবাক হবেন যে, চা বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষের সবচেয়ে প্রিয় পানীয়। ন্যাশনাল টুডে'র তথ্য অনুযায়ী, প্রতি সেকেন্ডে মানুষ ২৫ হাজার কাপ চা পান করেন। অর্থাৎ প্রতিদিন দুই বিলিয়ন কাপেরও বেশি চা পান করা হয়।
২০০৫ সালে চা উৎপাদনকারী দেশগুলো এক হয়ে আন্তর্জাতিক চা দিবস পালন করে। এই দেশগুলো হলো- শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, কেনিয়া, মালয়েশিয়া ও উগান্ডা। পরে ২০১৯ সালে ২১ মে বিশ্ব চা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতিসংঘ চা দিবসকে হ্যাঁ বলে। ২০২০ সালের ২১ মে জাতিসংঘ প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব চা দিবস পালন করে।
ধারণা করা হয়, বিশ্বের জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চা পানকারীদের সংখ্যাও বাড়বে। ভারত ও চীনে চায়ের ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে। চা পানে এই দুটি দেশ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩৭ শতাংশ অবদান রাখে।
চা মূলত চীন থেকে এসেছে। আর গরম চায়ের আছে একটি দীর্ঘ ইতিহাস। যা প্রায় ৫ হাজার বছর আগের। চা নিয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে- একজন চীনা সম্রাট গরম পানির কাপ নিয়ে একটি গাছের নীচে বসেছিলেন। তখন কিছু কিছু শুকনো পাতা ওই কাপে এসে পড়ে। পরে সম্রাট সেই পানীয় পান করে মুগ্ধ হন। এভাবে গরম চায়ের সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। যদিও এই গল্প কতটা সত্যি তা বলা মুশকিল। কিন্তু, এটাতো সত্যি কথা যে- শত শত বছর ধরে মানুষ গরম চা পান করে আসছেন।
বছরের পর বছর ধরে চা নিয়ে নানান গবেষণা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে গরম পানির সঙ্গে গুল্ম ও পাতা মিশিয়ে পান করা হয়েছে। কিন্তু চায়ের সবচেয়ে আধুনিক সংস্করণ গরম পানির সঙ্গে কয়েক টুকরো চা পাতার মিশিয়ে পান করা। এই পাতা ক্যামেলিয়া সাইনেনসিস উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায়। এশিয়ায় গরম চা পান শুরু হয় খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে। আর ষোড়শ শতাব্দীর আগে ইউরোপে চা প্রবেশ করতে পারেনি।
১৬০০-এর দশকে ইংল্যান্ডের মানুষ এই সুস্বাদু পানীয়টির প্রেমে পড়তে শুরু করেন এবং এটি আধুনিক শ্রেণির জনপ্রিয় পানীয় হয়ে উঠতে শুরু করে। ব্রিটিশ ভারতে চায়ের উৎপাদন প্রবর্তিত হয়। শুধু তাই নয় তখন বিশ্বব্যাপী এটি একটি শিল্প হয়ে ওঠে।