শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ৭ ১৪৩১

Aloava News24 | আলোআভা নিউজ ২৪

নজিরপুরে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত: ২০:০১, ৬ অক্টোবর ২০১৮

আপডেট: ০৮:৫৯, ৭ অক্টোবর ২০১৮

নজিরপুরে  অনিয়মের অভিযোগ

পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় দরিদ্র ও গৃহহীন পরিবারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া আশ্রয়ণ - ২ প্রকল্পের ঘর পেয়েছেন সচ্ছল পরিবারের লোকজনসহ সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের স্বজনরা। পরে বরাদ্দ পাওয়া ওই ঘর গৃহহীনদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ ঘর নির্মানের উপকরণ ছিলো নিম্নমানে এবং প্রকল্পের নিয়ম না মেনে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া ওই ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ১৮-২০ হাজার টাকা করে নিয়ে সচ্ছল পরিবারবর্গে এবং স্বজনদের ঘরগুলো বরাদ্দ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, এসব ঘর বরাদ্দ প্রকল্পের নিয়ম-নীতি ও যাচাই-বাছাই ছাড়াই সচ্ছলদের টাকার বিনিময়ে ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউএনও - এর আনুকূল আবস্থানের কারনে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা এ ঘরগুলো  বরাদ্দের অনিয়মের সুযোগ পেয়েছেন এবং তাতে নিম্নমানের উপকরনাদি ব্যবহার করা হচ্ছে। উপজেলা কার্যালয় থেকে ইতোমধ্যে বরাদ্দকৃত টাকা তুলে গৃহ নির্মাণ সামগ্রী তৈরি করে ঘরের নির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন করে তালিকাভুক্তদের ঘর তুলে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা। উপজেলা ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে "যার জমি আছে, ঘর নেই" তাদেরকে এই প্রকল্পের আওতাধীন নাজিরপুর উপজেলায় ২০১৭/১৮ অর্থবছরে এই প্রকল্পের অনুকুলে ১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাক্ষ টাকা। তাতে উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে এক'শ ৮৯ টি ঘর নির্মাণ করা হবে। উপজেলার সেখমাটিয়া ইউপির ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য শহিদুল ইসলামের অভিযোগ, তার ৭ নং ওয়ার্ড থেকে যে তালিকা দিয়েছে তার মধ্যে কেউ ঘর পায়নি। তার দেয়া তালিকার সকলেই দারিদ্র ও গৃহহীন ছিলো। টাকার বিনিময়ে ভূমিহীন পরিবারের পরিবর্তে জমি, বসতবাড়ি আছে এমন মানুষদের ঘর দেওয়া হয়েছে। তার ওয়ার্ডে ঘর পেয়েছে চেয়ারম্যানের মটর সাইকেল চালক জিয়াদ মোল্লা। ওই ঘর তিনি তার প্রতিবেশী মাজাহার খানের নিকট ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। কর্তৃপক্ষ জিয়াদের নামে বরাদ্দ দেয়া ঘরটি মাজাহারের বাড়ীতে তুলেও দিয়েছে এবং ঘরে সামনে কর্তৃপক্ষের দেয়া সাইনবোর্ডে উপকারভোগী হিসেবে জিয়াদ মোল্লার নামসহ গৃহ নং- ৯৯, বাস্তবায়নকারী-ঝুমুর বালা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নাজিরপুর লেখা রয়েছে। তার ঘরে উপকারভোগী হিসেবে অন্য লোকের নাম কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একজন গৃহহীন মানুষ। মাত্র ৪ শতক জায়গার ওপর বাড়ী। অন্য কোন জমিও নাই। দিন মজুরের কাজ করে ৬ জনের সংসার চালাই। চার ছেলেসহ স্ত্রী নিয়ে কোন রকম ছাপরা ঘরে বসবাস করতাম। উপজেলা ঘর এসেছে শুনে চেয়ারম্যানের কাছেও গিয়েছি কিন্তু আমার নামে ঘর বরাদ্দ হয় নাই। পরে বাধ্য হয়ে প্রতিবেশী জিয়াদ মোল্লার কাছে তার বরাদ্দ পাওয়া ঘরটি ৩০ হাজার টাকায় কিনেছি। সুদে এনে জিয়াদকে ২০ হাজার টাকা দিয়েছে। এখনো ১০ হাজার টাকা দিতে পারি নাই। অভিযোগের বিষয়ে জানতে জিয়াদ মোল্লার সাথে কথা হলে তিনি ঘর বিক্রির কথা অস্বীকার করে বলেন, মাজাহার আমার আত্মীয় এবং তিনি গৃহহীন তাই আমার নামে বরাদ্দ হওয়া ঘরটি তাকে দেয়া হয়েছে।
শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়