বিশ্বের শক্তিধর বাহিনী নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট বা এনওয়াইপিডিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যাপ্টেন পদে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশি আমেরিকান খন্দকার আব্দুল্লাহ। তিনিই কোনো বাংলাদেশি যিনি গৌরবোজ্জ্বল এনওয়াইপিডির এমন শীর্ষস্থানীয় একটি পদে যোগ দেওয়ার সুযোগ পেলেন। শুক্রবার সকালে তিনি নতুন দায়িত্বে শপথ নেন।
নিউ ইয়র্কের পুলিশ কমিশনার জেমস ও' নিল খন্দকার আব্দুল্লাহর হাতে পদোন্নতির সনদ তুলে দেন। এরপর খন্দকার আব্দুল্লাহর মা এবং স্ত্রী তাঁকে গোল্ডেন বার পরিয়ে দেন। একই দিন আরো দুজন বাংলাদেশি নিউ ইয়র্ক ট্রাফিক বিভাগে পদোন্নতি পেয়েছেন। এ উপলক্ষে ওয়ান পুলিশ প্লাজায় আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানের। এ সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। খন্দকার আব্দুল্লাহর বন্ধু, পরিবার এবং স্বজনেরাও সেখানে উপস্থিত হলে এক উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়।
নিউ ইয়র্ক পুলিশের এই নির্বাহী পদে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে ৩৩ বছর বয়সী আব্দুল্লাহ শহরটির পুলিশ কমিশনার হবার দৌঁড়ে থাকলেন। একসময় তিনিই প্রথম কোনো বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের রাজধানীখ্যাত নিউ ইয়র্কের পুলিশ কমিশনার হতে পারেন বলে মত বিশ্লেষকদের।
ক্যাপ্টেন পদে শপথ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি। পরে সাংবাদিকদের মাধ্যমে আব্দুল্লাহ বলেন, একজন বাংলাদেশি আমেরিকান হিসেবে গর্বিত তিনি। যে শহর তাকে এতকিছু দিয়েছে, সেই নিউ ইয়র্কের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্ভাব্য সবকিছু করার অঙ্গীকারের কথা বলেন তিনি। একই সঙ্গে তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মানুষ চাইলে সব পারে। যেকোনো ভালো কাজে তরুণদের এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন এই কৃতি মানুষটি।
বাবা-মায়ের সঙ্গে অভিবাসী হয়ে ১৯৯৩ সালে খন্দকার আবদুল্লাহ আমেরিকায় যান। সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার তালতলা গ্রামের প্রয়াত খন্দকার মদব্বির আলী ও মুহিবুন্নেসা চৌধুরীর সন্তান তিনি। নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এস্টোরিয়া এবং উডসাইডে তাঁর বেড়ে ওঠা।
২০০৫ সালের সামারে নিউ ইয়র্কের পুলিশ বিভাগে যোগ দেন খন্দকার আবদুল্লাহ। ক্রিমিনাল জাস্টিসের ওপর স্নাতক ডিগ্রি লাভ করা খন্দকার আবদুল্লাহ তাঁর কাজের জন্য এরইমধ্যে পুলিশের আটটি মেডেল লাভ করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ নগরী নিউ ইয়র্কে খন্দকার আবদুল্লাহর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে অনেক খুনি, মাদকসম্রাটসহ দুর্ধর্ষ অপরাধী।
আব্দুল্লাহর মতো এনওয়াইপিডির নিয়মিত বাহিনীতে প্রায় ৩০০ বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছেন। এ ছাড়া নিউ ইয়র্ক নগরীর ট্রাফিকসহ পুলিশের অন্যান্য বিভাগ মিলে এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।