শত বিপদেও পিছু হটেননি মোহাম্মাদ নাসিম

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহর মৃত্যুতে রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা বলেছেন,সদা হাস্যোজ্জ্বল ও বিনয়ী মোহাম্মদ নাসিম ছিলেন প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা। এমপি-মন্ত্রী ও জাতীয় নেতা ক্যাপ্টেন মুনসুর আলীর সন্তান হয়েও তিনি অত্যন্ত সাদামাটা জীবন-যাপন করতেন। জনগণের আস্থা অর্জন করেছিলেন। শত বিপদ ও ঝুঁকির মুখেও তিনি পিছু হটেননি।
তারা বলেন,করোনার কারণে নাসিমের মতো জাতীয় নেতার মুখটা শেষবারের মতোও দেখা যায়নি। এই করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও বেশি কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
রোববার (১৪ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা এসব কথা বলেন।
দুই দিন বিরতির পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের মুলতবি অধিবেশন আজ শুরু হয়। অধিবেশনের শুরুতে সম্পূরক কার্যসূচিতে শোক প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেন স্পিকার। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের জীবন বৃত্তান্ত তুলে ধরেন। এসময় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহর জীবন বৃত্তান্তসহ শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এরপর মোহাম্মদ নাসিমের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা হয়।
করোনা পরিস্থিতিতে গভীর শোকার্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় অংশ নেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, আওয়ামী লীগের মতিয়া চৌধুরী, ডা. হাবিবে মিল্লাত ও মৃণাল কান্তি দাস, ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এবং জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, সদা হাস্যোজ্জ্বল ও বিনয়ী মোহাম্মদ নাসিম ছিলেন প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা। এমপি-মন্ত্রী ও জাতীয় নেতা ক্যাপ্টেন মুনসুর আলীর সন্তান হয়েও তিনি অত্যন্ত সাদামাটা জীবন-যাপন করতেন। জনগণের আস্থা অর্জন করেছিলেন। আমরা একই দল না করলেও তাকে দেখলে মনে হতো তাকে সব কথাই বলা যায়। শত বিপদ ও ঝুঁকির মুখেও তিনি পিছু হটেননি। সকল বাধা উপেক্ষা করে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে গেছেন।
সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক কারণে পিতা-পুত্র একসঙ্গে জেলে থাকার ঘটনা মোহাম্মদ নাসিমের ক্ষেত্রে ঘটেছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে সবসময় সামনে ছিলেন। বারবার পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। রাজনীতিতে তিনি যে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা জনগণ অনন্তকাল মনে রাখবে।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে মোহাম্মদ নাসিমের সাহসী ভূমিকা তুলে ধরে ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, ১৪ দলের সমন্বয়ক হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। তার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কখনো ভাবিনি আমরা অন্য দলের। মনে হয়েছে, একই রাজনৈতিক পরিবারের। সবাইকে সহজেই আপন করে নিতেন।
জাপা নেতা কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, শুধু সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের নয়, বিরোধী দলের খোঁজ-খবরও রাখতেন তিনি। সংসদে আরো বেশি সক্রিয় ভূমিকা রাখার পরামর্শ দিতেন। বিএনপি-জামায়াতের শাসন আমলে বহুবার বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি।
আলোআভানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/আরএ