ঢাবিতে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, বিশেষ মোনাজাত, প্রার্থনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিন সকাল ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কেন্দ্রীয় ভবন ও আবাসিক হলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল উদ্দীন, প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী। এর সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও শতবর্ষে পা রাখবে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। আমরা একসঙ্গে শততম বার্ষিকী পালন করব।
সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতেও শ্রদ্ধা জানান তারা। এর পর বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারীদের সন্তানদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। জোহর নামাজের পর মসজিদুল জামিয়ায় বিশেষ মোনাজাত এবং বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে কার্জন হল ও টিএসসিতে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে সঙ্গীত বিভাগের উদ্যোগে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের গান, কবিতা, নৃত্য পরিবেশন এবং থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের উদ্যোগে নাটক মঞ্চায়ন করা হয়।
ভিপি নুর ও সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের শ্রদ্ধা : মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’-এর পক্ষ থেকে ওই শ্রদ্ধা জানান তিনি। এ সময় পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, ফারুক হাসান, ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, বছরের এই একটি দিন যেন আমাদের নতুন করে জাগিয়ে তুলতে শেখায়। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র পরিচালনাকারীদের কাছে তরুণ সমাজের প্রত্যাশা, তারা যেন মুক্তিযুদ্ধের সঠিক চেতনা লালন এবং সে অনুযায়ী আগামী প্রজন্মকে পরিচালিত করেন। তবেই সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।
এর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তন চত্বর এবং মধুর ক্যান্টিনের প্রতিষ্ঠাতা ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম বুলেটে সপরিবারে নিহত মধুসূদন দে’র প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা।
ছাত্রলীগের শ্রদ্ধা : উৎসবমুখর পরিবেশে মহান স্বাধীনতা দিবস পালন করেছে ছাত্রলীগ ও ডাকসুর ছাত্রলীগ প্যানেল। প্রভাতে সংগঠনটির ডাকসু নেতৃবৃন্দ ও পরে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতির প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। সেখানে ডাকসুর জিএস ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, এজিএস ও ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন, ডাকসুতে ছাত্রলীগ প্যানেলের নির্বাচিত প্রতিনিধিসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এর পর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তন চত্বর ও মধুসূদন দে’র প্রতিকৃতিতেও ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন ছাত্রলীগ।
আলোআভানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/আরএ